কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যাওয়া এক কলেজছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত চিকিৎসক মো. জাকের হোসেন জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থার (আইওএম) পক্ষ থেকে ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারে কর্মরত আছেন। সোমবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ঘটনাটি ঘটে।

জোরপূর্বক যৌন হয়রানি করেছে- এমন অভিযোগ এনে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ইউএনওসহ চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, একজিমা রোগে আক্রান্ত ওই ছাত্রী গত ৪ নভেম্বর টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান। চিকিৎসক তাকে সেখানে ভর্তি হতে বলেন। সোমবার দুপুরে পায়ের ড্রেসিং করতে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এ সময় ডা. জাকের হোসেনসহ তার সঙ্গে থাকা নার্স ও এক পুরুষ সহকারী সম্পূর্ণ কাপড় খুলতে বলেন। এতে রাজি না হলে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক জোর করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করেন। প্রতিবাদ করলে অপারেশন থিয়েটার থেকে তাকে বের করে দেয়। তাৎক্ষণিক ঘটনাটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান ভুক্তভোগী। একই দিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ ইউএনওকে লিখিত অভিযোগ করেন ওই কলেজছাত্রী।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত চিকিৎসক জাকের হোসেন বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমার দুর্নাম রটাতে এসব কাহিনি সাজানো হচ্ছে। আমার চেম্বারে আরও লোক ছিল, তাদের সামনে কীভাবে একটা মেয়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবো? বিষয়টির সত্য-মিথ্যা স্যাররা তদন্ত করবেন।’

আইওএমের কক্সবাজারের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সমীর কুমার হাওলাদার বলেন, ‘ওই চিকিৎসক টেকনাফ হাসপাতালে কর্মরত আছেন। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত করবে। তাছাড়া কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা. এনামুল হক জানান, ‘এক তরুণী যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি জানিয়ে কক্সবাজার সিভিল সার্জনের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হবে। তদন্ত মাধ্যমে বিষয়টি প্রমাণ হলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।’

‘অভিযোগ হাতে পাওয়ার পর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী।

জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে প্রমাণিত হলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’